ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা অসুবিধা এবং চার্জ

আমরা প্রায় সকলেই জানি, ইসলামী ব্যাংকে অনেক ধরনের ব্যতিক্রম ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায় বা সম্ভব । তারই ধারাবাহিকতায় ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সম্পর্কে সুবিধা অসুবিধা এবং এর বিস্তারিত সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।

ইসলামী-ব্যাংক-সেভিংস-একাউন্ট-সুবিধা

কারণ আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকের সম্পর্কে সঠিক এবং ভালো ধারণা রাখেন । তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন ইসলামিক ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট এর পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক এর একাউন্ট সুবিধা জেনে নিতে পারলে । আপনি সেভিংস একাউন্ট এর দিকেও ঝুঁকে পড়বেন ।আজকে এই পোস্টটিতে আমরা ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্টে বিস্তারিত তথ্য এবং এর সুবিধা অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করব । যা অবশ্যই আপনাদের প্রয়োজন আসবে বা আসতে পারে ।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা অসুবিধা এবং চার্জ

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট কি ?

মূলত আপনি যদি, ইসলামী ব্যাংকের অধীনে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান বা করেন। তাহলে একাউন্টের ধরনের মধ্যে থেকে একটি হলো ইসলামিক ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট ।

ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ব্যবহারকারীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রকমের ব্যাংকিং একাউন্ট তৈরি সুযোগ করে দিচ্ছে ইসলামী ব্যাংক। যা সহজ করছে আপনার একাউন্ট তৈরিতে। তারই ধারাবাহিকতায় রয়েছে সেভিংস একাউন্ট।

আরো পড়ুনঃএলোভেরা মুখে দিলে চুলকায় কেন জানতে বিস্তারিত 

কিভাবে খুব সহজে ইসলামী ব্যাংকের অধীনে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায়। এ সম্পর্কে নিম্নলিখিত আমি আরো কিছু তথ্য বা আর্টিকেল দিলাম ।

  • ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার অনেকগুলো প্রক্রিয়া বা নিয়ম আছে ।
  • বাড়িতে বসে কিভাবে এখন তৈরি করা যায় ?
  • ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট অনলাইনে কিভাবে  খুলব ?
  • ইসলামী ব্যাংকে কিভাবে একাউন্ট খোলা যায় এবং কি কি কাগজপত্র লাগে ?

চলুন জেনে নেওয়া যাক 

1.বাড়িতে বসে কিভাবে একাউন্ট তৈরি করা যায় ?

  • স্মার্টফোনের সাহায্যে আপনি খুব সহজেই একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। এর জন্য প্রয়োজন আপনার স্মার্ট ফোন, এন আইডি কার্ডের ছবি এবং আপনার নিজের ছবি। যা সেলফি মাধ্যমে ছবি তুলে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন ।

2.ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট অনলাইনে কিভাবে খুলবো ?
  • ই-কেওয়াইসি একাউন্ট হলো একাউন্ট খোলার একটি প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রধারী যেকোনো ব্যক্তি তার স্মার্ট ফোন দিয়ে এনআইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ডের সেলফি এবং নিজের ছবি তুলে বাড়িতে বা যেকোনো স্থানে যেকোনো সময় ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।
3.ইসলামী ব্যাংকে কিভাবে একাউন্ট খোলা যায় এবং কি কি কাগজপত্র লাগে ?
  • ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য সাধারণত যা যা প্রয়োজন তা হলো, আবেদনকারীর ছবি জাতীয় পরিচয় পত্র /এন আই ডি,এবং যে নোমিনী তার ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্র এবং একাউন্ট  খোলার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ। এছাড়া যিনি একাউন্ট খুলছেন তার স্বাক্ষর এবং একাউন্ট খোলার জন্য ব্যাংক নির্ধারিত একটি ফরম। ফরমটি পূরণ করতে হবে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে একাউন্ট খোলার জন্য ব্যাংক কৃতক নির্ধারিত কিছু অন্য কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে।

আরো পড়ুনঃফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসে ইনকাম করার ১১ টি টিপস

একাউন্ট খোলার জন্য যা যা প্রয়োজন তা নিম্নে দেওয়া হলো_

  • আবেদনকারীর ছবি 
  • সাধারণত পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি প্রয়োজন হয় ।

জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি 

আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও মূলকপি উভয় প্রয়োজন হতে পারে এবং যিনি নমিনী তার অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের মনোনীত ব্যক্তির ছবিও জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি প্রয়োজন হবে।

অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ 

ইসলামী ব্যাংকগুলোতে একাউন্ট খোলার জন্য কিছু প্রাথমিক অর্থ জমা দিতে হয়। যা একাউন্টে ধরনের উপর নির্ভর করে অর্থ জমা হয় ।

স্বাক্ষর 

  • একাউন্ট খোলার ফর্মে আবেদনকারী স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়।

অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম 

  • ব্যাংক থেকে একটি অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম সংগ্রহ করতে হবে এবং তা পূরণ করে পুনরায় জমা দিতে হবে।

অন্যান্য কাগজপত্র 

  • ব্যাংক কৃতক নির্ধারিত অন্য যে কোন কাগজপত্র লাগতে পারে। যা একাউন্ট খোলার সময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেবে কি কি লাগতে পারে।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা ?

আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকের অধীনে একটি সেভিংস একাউন্ট তৈরি করতে চান। তাহলে অ্যাকাউন্ট তৈরি পূর্বে, সেভিংস একাউন্টের সুবিধা সম্পর্কে জানা অবশ্যক। যা পরে আপনার অনেক উপকারে আসতে পারে ।

এই রিলেটেড অ্যাকাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনি যে রকম সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। কিংবা কত টাকা লেনদেন করতে পারবেন। সেই সম্পর্কে একটি সঠিক ধারণা রাখা অত্যাবশ্যকীয় এবং প্রয়োজনীয়।

তাহলে আর দেরি না করে চলুন, এখনই দেখে নিই ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত উপকার আপনি পাবেন সেই সমস্ত উপকার সম্পর্কে দেওয়া হলো।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর মুনাফা ও লাভ ?

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট ব্যবহারকারী হিসাবে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস অ্যাকাউন্ট এর ক্ষেত্রে যে সমস্ত মুনাফার অংশীদার আপনি হতে পারবেন। সেগুলো নিচে দেওয়া হলো_

আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্টে টাকা রাখেন তাহলে ৩.৫% হারে মুনাফা পেতে পারেন। এটি মূলত প্রতি ৬ মাস পর পর দেওয়া হয়ে থাকে। আর আপনাকে দেওয়া এই মুনাফার উপরে সরকারি প্রায় ১৫% ভ্যাট কার্যকর করে থাকে ।

ইসলামী ব্যাংকের সেবা সমূহ ?

ইসলামী ব্যাংক একটি ডিজিটাল সেবা যা গ্রাহককে আর্থিক সেবা প্রদান করে থাকে। এর কিছু ডিজিটাল সেবা হলো_

  • .আই ব্যাংকিং ।
  • .সেলফিন ।
  • .এসএমএস ব্যাংকিং ।
  • .মোবাইল ব্যাংকিং ।
  • .এটিএম সেবা ।
  • .এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ।
  • .সিআরএম / সিডিএম সেবা ।

বাংলাদেশের বর্তমান ইসলামী ব্যাংকের শাখা রয়েছে কতটি ?

ইসলামী ব্যাংক বর্তমানে ৪০০ টি শাখা ,২৬৫ টি উপ শাখা ,২৭৮৩ টি এজেন্ট আউটলেট ,৩০৪০ টি এটিএম / সি আর এম বুথের মাধ্যমে ২ কোটি ৫০ লাখ গ্রাহককে সেবা প্রদান করছে, ১ লক্ষ ৬১ হাজার কোটি টাকার আমানত।

 যা বিগত বছরের তুলনায় ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি ও ১ লক্ষ ৫৯ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের মাইল ফলক স্পর্শ করেছে। এটি করেছে ২০২৪ সালে।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস এসএমএস ব্যাংকিং চার্জ ?

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট ব্যবহারকারী হিসেবে এসএমএস ব্যাংকিং চার্জ হিসেবে প্রতি ৬ মাস পর পর আপনার একাউন্ট থেকে ৫৭ টাকা + ৭.৫ ভ্যাট কেটে নেওয়া হবে।

 এই এসএমএস ব্যাংকিং চার্জ মূলত প্রত্যেকটি ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট থেকে প্রযোজ্য হয়।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সম্পর্কিত চার্জ ও লিস্ট ?

আপনার অ্যাকাউন্টের মূলত অ্যাক্টিভিটির উপর ভিত্তি করে আপনার একাউন্ট সম্পর্কিত চার্জ গুলো নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। তবে অ্যাকাউন্ট একটিভ বা চলতে থাকলে প্রতিবছরের ৬ মাস পর পর চার্জ পরিশোধ যোগ্য হবে ।

বছরে প্রতি ৬ মাস পর পর আপনার একাউন্ট থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ টাকা কেটে নেওয়া হবে। যা মূলত আপনার নির্ধারিত এমাউন্ট বা পরিমাণ থেকে প্রযোজ্য হবে ।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস অ্যাকাউন্টের চার্জ লিস্ট_

  • 1.আপনার একাউন্টে ১০ হাজার টাকার বেশি এবং ২৫ হাজার টাকার কম থাকলে ১০০ টাকা + ১৫% ভ্যাট কাটা যাবে বা প্রযোজ্য হবে ।
  • 2.আপনার একাউন্টে ২৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা থাকলে ২০০ টাকা+ ১৫% ভ্যাট কাটা যাবে বা প্রযোজ্য হবে ।
  • 3.আপনার একাউন্টে ২লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা থাকলে ২০০ টাকা + ১৫% ভ্যাট, চার্জ প্রযোজ্য হবে বা কাটা যাবে। 
  • 4.সর্বশেষে, আপনার একাউন্টে ১০ লাখ টাকার বেশি থাকলে চার্জ হিসেবে কাটা যাবে ৩০০ টাকা + ১৫%  ভ্যাট ।

আর আপনি যদি একজন ইসলামিক ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহারকারী হিসেবে যদি সেভিংস অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন। তাহলে উপরের উল্লেখিত মুনাফা এবং চার্জ আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট অসুবিধা?

চলুন তাহলে এবারে এক নজরে দেখে নিন ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্টের অসুবিধা গুলো কি কি ?

  • 1.বর্তমানে প্রায় ৩.৫% হারে মুনাফা দেওয়া হয়ে থাকে যা অন্যান্য ব্যাংকের সেভিংস সুদের চেয়ে কম হয়ে থাকে। 
  • 2.প্রতিমাসে নয়, প্রতি ৬ মাসে একবার মুনাফা প্রদান করা হয় থাকে। এতে গ্রাহককে অনেক অপেক্ষা করতে হয় ।

আরো পড়ুনঃফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম - গিগ তৈরির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

  • 3.একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা থাকলে, প্রতি ৬ মাসে ১০০ - ৩০০ টাকা পর্যন্ত চার্জ কাটা হয়। সঙ্গে ভ্যাট ও প্রযোজ্য হয়। এতে অনেক সময় গ্রাহকরা চার্জ বেশি মনে করে।
  • 4.প্রতি ৬ মাস পর পর ৫৭ টাকা + ১৫% ভ্যাট কাটা হয়ে থাকে। যদিও কিছু কিছু ব্যাংকে এটি বিনামূল্যে বা ফ্রিতে দেওয়া হয়ে থাকে ।
  • 5.কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ অনলাইনে না করা গেলে সরাসরি শাখায় যেতে হয়। যা সময়সাপেক্ষ এবং ঝামেলা পূর্ণ হয়ে থাকে। এতে গ্রাহক বিব্রত বোধ বা বিরক্ত হতে পারে ।

সব শেষে লেখক এর মন্তব্য

আমি আশা করছি, এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যগুলো আপনার ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার কাজে লাগতে পারে। আমি আরো আশা করছি, আপনারা পুরোটা পড়ে বুঝতে পেরেছেন এবং বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পেরেছেন।

                                  ধন্যবাদ?  null

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইনফবারী ২৪নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url